ফার্মেন্টেশন কাকে বলে?

ফার্মেন্টেশন কাকে বলে :-

যে প্রক্রিয়ায় কিছু সংখ্যক ছত্রাক এবং অবায়বীয় ব্যাকটেরিয়া তাদের দেহ থেকে নিঃসৃত এনজাইমের সাহায্যে হেক্সোজ জাতীয় শর্করাকে অসম্পূর্ণভাবে জারিত করে ইথাইল অ্যালকোহল ও কার্বন ডাইঅক্সাইড অথবা শুধু ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে তাকে ফার্মেন্টেশন বা গাঁজন  (Fermentation) বলে।

বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে অবাত শ্বসন তথা ফার্মেন্টেশন সম্পর্কিত জীবের ব্যবহার নিচে আলোচনা করা হলো-

১। পাউরুটি শিল্পে ঈস্টের ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়াকে এ শিল্পে কাজে লাগানো হয়। ময়দা ও চিনির সাথে ঈস্ট যোগ করে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় রেখে দিলে অবাত শ্বসনের ফলে সৃষ্টি হয় CO2 এবং ইথাইল অ্যালকোহল। CO2, গ্যাস এর চাপে পাউরুটি ফুলে ফাঁপা হয়। আর অ্যালকোহল তাপে বাষ্প হয়ে উড়ে যায়।

২। মদ্য শিল্পে ঈস্টের অবাত শ্বসন তথা ফার্মেন্টেশনকে কাজে লাগিয়ে মদ তৈরি করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় আঙ্গুরের রস থেকে ওয়াইন এবং আপেলের রস থেকে সিডার প্রস্তুত করা হয়। তালের রস, খেজুরের রস, চিটাগুড় থেকেও অ্যালকোহল ও দেশী মদ তৈরি করা হয়।

আরও পড়ুন:- সাইটোপ্লাজম কাকে বলে?

৩। অ্যালকোহল প্রস্তুতিতে শর্করার সাথে ঈস্টের ফার্মেন্টেশনে ইথাইল অ্যালকোহল তৈরি হয়। একই প্রক্রিয়ায় বিউটানল, প্রপানল ইত্যাদিও প্রস্তুত করা হয়।

৪। দুগ্ধ শিল্পে দই হচ্ছে ফার্মেন্টকৃত দুগ্ধজাত পদার্থ। দুধের সাথে Lactobacillus helveticus, Streptococcus facts ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়া মিশিয়ে ৩৭-৩৮° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৩-৫ ঘণ্টা রেখে দিলে দই তৈরি হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার অংশগ্রহণে এক জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পনির উৎপাদিত হয়।
ফার্মেন্টেশন কাকে বলে
আরও পড়ুন:- সালোকসংশ্লেষণ কাকে বলে ?

৫। ওষুধ শিল্পে ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ার সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন করা হয়। পেনিসিলিন, স্টেপটোমাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন ইত্যাদি অ্যান্টিবায়োটিক বিভিন্ন ছত্রাক ও অ্যাকটিনোমাইসিটিস এর ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয় উৎপন্ন করা হয়।

৬। চা ও তামাক শিল্পে Bacillus megaterium নামক ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে চা ও তামাক গাছের পাতাকে সুগন্ধি ও রুচিকর করা হয়।

৭। পাটের তন্ত্র নিষ্কাশনে Clostridium buryricum নামক ব্যাকটেরিয়ার ফার্মেন্টেশন ক্রিয়ায় পাটের তন্তু নিষ্কাশন করা

৮। চামড়া শিল্পে চামড়া থেকে চর্বি ও অন্যান্য টিস্যু আলাদা করার জন্য বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়। এ সব ব্যাকটেরিয়া ফার্মেন্টেশনের ফলে চামড়া থেকে গোম, মেটিস্যু ইত্যাদির অপসারণ ঘটে। যথা- Bacillus subtilis.

৯। এনজাইম উৎপাদনে । Bacillus subtilis, Aspergillus niger, Aspergillus oryzae প্রভৃতি অণুজীব ব্যবহার করে অ্যামাইলেজ, প্রোটিয়েজ, সেলুলোজ, পেকটিনেজ ইত্যাদি এনজাইম উৎপাদন করা যায়।

১০। ভিটামিন তৈরিতে থিয়ামিন ও রিবোফ্লাবিন নামক ভিটামিন B1 ও B2 এ প্রক্রিয়ায় ঈস্টের সাহায্যে তৈরি করা হয়।

আরও পড়ুন:- যোগান কি?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ