আয়তক্ষেত্র এবং বর্গক্ষেত্রের পার্থক্য

একটি বর্গক্ষেত্র এবং একটি আয়তক্ষেত্রের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল একটি বর্গক্ষেত্রের সমস্ত বাহু সমান, যেখানে একটি আয়তক্ষেত্রের বিপরীত দিকগুলি সমান। জ্যামিতিতে, আমরা বিভিন্ন ধরণের চতুর্ভুজ যেমন বর্গক্ষেত্র, আয়তক্ষেত্র, ট্রাপিজিয়াম, সামন্তরিক, রম্বস ইত্যাদি সম্পর্কে শিখেছি।

এই সমস্ত চতুর্ভুজ দ্বি-মাত্রিক আকার বা ত্রিমাত্রিক আকারের মতো যেকোনো একটি বিভাগের অধীনে পড়তে পারে । সমস্ত চতুর্ভুজ কয়েকটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা একে অপরের থেকে আলাদা করে। এই পোস্টে, আসুন বিস্তারিতভাবে একটি আয়তক্ষেত্র এবং একটি বর্গক্ষেত্রের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করি।

বর্গক্ষেত্র এবং আয়তক্ষেত্রের সংজ্ঞা :-

বর্গক্ষেত্র:

একটি বর্গক্ষেত্র হল একটি বদ্ধ দ্বি-মাত্রিক সমতল চিত্র যার চারটি বাহু রয়েছে। বর্গক্ষেত্রের চারটি দিকই সমান পরিমাপের। এছাড়াও, একটি চতুর্ভুজের চারটি অভ্যন্তরীণ কোণ হল 9o ডিগ্রি। অন্য কথায়, একটি বর্গক্ষেত্রকে চতুর্ভুজ বা 4-পার্শ্বযুক্ত বহুভুজ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যেহেতু সমস্ত কোণ সমান পরিমাপের, এটি একটি সমভুজাকার চতুর্ভুজ হিসাবে বিবেচিত হয়।

আরও পড়ুনঃ সরল চতুর্ভুজ কাকে বলে?

আয়তক্ষেত্র:

একটি আয়তক্ষেত্র হল চারটি বাহু বিশিষ্ট একটি চতুর্ভুজ। একটি আয়তক্ষেত্রের বিপরীত বাহু একে অপরের সমান্তরাল। এর অর্থ হল আয়তক্ষেত্রের বিপরীত মুখগুলি সমান পরিমাপের। একটি আয়তক্ষেত্রের চারটি কোণ রয়েছে, প্রতিটির পরিমাপ প্রায় 90 ডিগ্রি। একটি বর্গক্ষেত্রের মতো, একটি আয়তক্ষেত্রকে একটি সমকোণী চতুর্ভুজও বলা হয়।

আয়তক্ষেত্র এবং বর্গক্ষেত্রের পার্থক্য :-

কোণের পার্থক্য:

আয়তক্ষেত্রে চারটি দীর্ঘকোণ থাকে, যেখানে বর্গক্ষেত্রে চারটি সমকোণ থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একটি আয়তক্ষেত্রের কোণগুলো হতে পারে 60°, 120°, 60° এবং 120°। অন্যদিকে, একটি বর্গক্ষেত্রের সব কোণ 90° হয়।

বাহুর পার্থক্য:

আয়তক্ষেত্রের চারটি বাহু সমান নয়, যেখানে বর্গক্ষেত্রের চারটি বাহু সমান থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একটি আয়তক্ষেত্রের বাহু গুলো হতে পারে 10 সেন্টিমিটার, 5 সেন্টিমিটার, 10 সেন্টিমিটার এবং 5 সেন্টিমিটার। কিন্তু বর্গক্ষেত্রে সব বাহু সমান থাকে।

ক্ষেত্রফলের পার্থক্য:

একটি আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল তার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের গুণফল হিসাবে পরিমাপ করা হয়। ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য × প্রস্থ অন্যদিকে একটি বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল সূত্র ব্যবহার করে পরিমাপ করা হয়: ক্ষেত্রফল = পার্শ্ব × পার্শ্ব।

আরও পড়ুনঃ জটিল চতুর্ভুজ কাকে বলে?

কর্ণের দৈর্ঘ্য:

পিথাগোরিয়ান উপপাদ্য অনুসারে, একটি আয়তক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য - দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের বর্গক্ষেত্রের সমষ্টির বর্গমূল।

তির্যকের দৈর্ঘ্য = √(দৈর্ঘ্য² + প্রস্থ² ) অন্যদিকে একটি বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য 2 এর বর্গমূল এবং বর্গক্ষেত্রের বাহুর গুণফল। তির্যকের দৈর্ঘ্য = √(2 × পার্শ্ব)

সাধারণ ও সম চতুর্ভুজের পার্থক্য:

আয়তক্ষেত্র হচ্ছে একটি সাধারণ চতুর্ভুজ, যেখানে বর্গক্ষেত্র হচ্ছে একটি সমচতুর্ভুজ।

আয়তক্ষেত্রের পরিধি = 2(দৈর্ঘ্য+প্রস্থ) অন্যদিকে বর্গক্ষেত্রের পরিধি = 4 x (পার্শ্বের দৈর্ঘ্য)

আয়তক্ষেত্রের বিপরীত দুটি কোণ সমানুপাতে বদলায়, যেখানে বর্গক্ষেত্রে সব কোণ সবসময় সমান থাকে।

আয়তক্ষেত্রের চারটি কোণের যোগফল 360 ডিগ্রি, যেখানে বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল 360 ডিগ্রি।

আয়তক্ষেত্রের দুইটি কোণের যোগফল ১৮০ ডিগ্রি হয়, যেখানে বর্গক্ষেত্রে প্রত্যেক কোণ ৯০ ডিগ্রি।

সংক্ষেপে, আয়ত ও বর্গের কোণ, বাহুল্য এবং ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের পদ্ধতিতে পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া আয়ত হচ্ছে সাধারণ চতুর্ভুজ এবং বর্গ হচ্ছে সমচতুর্ভুজ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ