এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের মধ্যে পার্থক্য?

অ্যানালগ বা এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করার পূর্বে আমাদের জানা দরকার অ্যানালগ ও ডিজিটাল কাকে বলে? তো চলুন আলোচনা করা যাক-

অ্যানালগ কম্পিউটার কাকে বলে:-

যে সকল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সংকেতের ওপর নির্ভর করে ইনপুট গ্রহণ করে প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পাদিত করে, সেসব কম্পিউটারকে অ্যানালগ কম্পিউটার বলা হয়।

তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য অ্যানালগ কম্পিউটারে বর্ণ বা অংকের পরিবর্তে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল বা অ্যানালগ বৈদ্যুতিক সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়। তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের পর প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণত মিটার, ওসিলোসকোপ ইত্যাদিতে প্রদর্শিত হয়। মোটরগাড়ির স্পিডোমিটার, প্লাইড রুল, অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার ইত্যাদি অ্যানালগ কম্পিউটারের উদাহরণ।

সাধারণত চাপ, তাপ, তরল পদার্থের প্রবাহ ইত্যাদির উঠা নামা বা হ্রাস-বৃদ্ধি পরিমাপের জন্য অ্যানালগ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া গাড়ি, উড়োজাহাজ, মহাকাশ যান ইত্যাদির গতিবেগ, বায়ু, তরল ও কঠিন পদার্থের চাপ এবং কোনো বিশেষ স্থানের বা কক্ষের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য অ্যানালগ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। 

অ্যানালগ কম্পিউটারের ফলাফলের সূক্ষ্মতা তুলনামূলকভাবে কম। অ্যানালগ কম্পিউটার কাকে বলে? তা আমারা জানলাম এবার আমরা ডিজিটাল কম্পিউটার কাকে বলে? সে সম্পর্কে আলোচনা করবো তার পর এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের মধ্যে যে পার্থক্য? তা জানার চেষ্টা করবো।

আরও পড়ুন :- কম্পিউটার কাকে বলে?

ডিজিটাল কম্পিউটার কাকে বলে :-

যে সকল কম্পিউটার বাইনারি পদ্ধতিতে অর্থাৎ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্রিয়া সম্পন্ন করে, সেসব কম্পিউটারকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলা হয়।

তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য ডিজিটাল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সিগন্যালের পরিবর্তে ডিজিট (0/1) ব্যবহার করে। ডিজিটাল কম্পিউটারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের পর প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণত মনিটরে প্রদর্শিত হয়। ডিজিটাল কম্পিউটারের গতি ও কার্যকারিতা অ্যানালগ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক বেশি ও ভালো।

আবার ডিজিটাল কম্পিউটারের ফলাফলের সূক্ষ্মতা অ্যানালগ কম্পিউটারের তুলনায় অনেক বেশি। বর্তমান বাজারে প্রচলিত প্রায় সকল কম্পিউটারই ডিজিটাল পদ্ধতির কম্পিউটার। মাইক্রোকম্পিউটার, মিনি কম্পিউটার, মেইনফ্রেম কম্পিউটার, সুপার কম্পিউটার হচ্ছে ডিজিটাল কম্পিউটারের উদাহরণ।

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গবেষণামূলক কাজ থেকে শুরু করে অফিস-আদালত, ব্যাংক, বিমা, ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, লেখাথুলা, বিনোদন- এমনকি ব্যক্তিগত কাজেও ডিজিটাল কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে।
অ্যানালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের মধ্যে পার্থক্য

এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের মধ্যে পার্থক্য :-

অ্যানালগ কম্পিউটারডিজিটাল কম্পিউটার
যে কম্পিউটার সময়ের সাথে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল উপাত্ত বা অ্যানালগ বৈদ্যুতিক সংকেতের ওপর নির্ভর করে নির্মিত হয় তাকে অ্যানালগ কম্পিউটার বলে।যে কম্পিউটার বাইনারি পদ্ধতিতে, অর্থাৎ ০ এবং ১ এর উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণের কাজ করে থাকে তাকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলে।
অ্যানালগ কম্পিউটারে অ্যানালগ সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়।ডিজিটাল কম্পিউটারে ডিজিটাল সিগন্যাল ব্যবহৃত হয়।
তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের পর প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণত মিটার, ওসিলোসকোপ ইত্যাদিতে প্রদর্শিত হয়।ডিজিটাল কম্পিউটারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের পর প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণত মনিটরে প্রদর্শিত হয়।
অ্যানালগ কম্পিউটার কাজ করে পদার্থবিজ্ঞানের নীতিতে।ডিজিটাল কম্পিউটার কাজ করে গণিতের নিয়মে।
অ্যানালগ কম্পিউটার একটি পরিমাপক ব্যবস্থা।ডিজিটাল কম্পিউটার মূলত একটি সংখ্যাগত ব্যবস্থা।
এক ধরনের কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার সাধারণত অন্য ধরনের কাজে ব্যবহার করা যায় না।সাধারণত বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যবহার করা যায়।
ফলাফলের সূক্ষ্মতা কম।ফলাফলের সূক্ষ্মতা অনেক বেশি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ