কালবৈশাখী ঝড় কাকে বলে?

বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বজ্র-বিদ্যুৎ পূর্ণ ঝড় সৃষ্টি হয়। এই ঝড় বৈশাখ মাসে কখনও চৈত্র মাসে উত্তর-পশ্চিম দিক হতে আসে বলে একে কালবৈশাখী ঝড় বা গ্রীষ্মকালীন উত্তর পশ্চিম ঝাড় বা বজ্রবিদ্যুৎপূর্ণ ঝড়বৃষ্টি বলা হয়।

কালবৈশাখী - কে বায়ুপুঞ্জ বজ্রঝড় অথবা পরিচলনগত বজ্রঝড় নামেও আখ্যায়িত করা যায়।

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে কালবৈশাখী ঝড় সুপরিচিত। কালবৈশাখী ঝড় বায়ুপ্রবাহ ও ভারী বৃষ্টিপাতের সাথে সংঘটিত হয়। কালবৈশাখী ঝড় ভারী বৃষ্টিপাত ও বজ্রসহ ভূ-পৃষ্ঠের উপর আঘাত হানে। এতে ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা, ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং মানুষ ও পশু-পাখি মারা যায়।

বাংলাদেশের ঢাকায় ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিলে সংঘটিত কালবৈশাখী ঝড়ে অন্তত ২৪ জন মানুষ মারা গেছে ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য মে মাসের মধ্যে কালবৈশাখী ঝড় তীব্র রূপ ধারণ করে।

আরও পড়ুন:- টর্নেডো কাকে বলে?

মূলত আর্দ্র ও শুষ্ক বায়ুপুঞ্জ পরস্পর মুখোমুখি হলে এইরূপ কালবৈশাখী ঝড়ের সৃষ্টি হয়। কালবৈশাখীর গতি প্রতি ঘণ্টায় ৪০ হতে ৮০ কিলোমিটার। অনেক সময় এ ঝড়ের গতি ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটারেরও বেশি হয়ে থাকে।
কালবৈশাখী ঝড় কাকে বলে

কালবৈশাখী ঝড় কখন হয় :-

কালবৈশাখী মূলত ভূমিতে আঘাত হানে তবে এর প্রভাব সাইক্লোনের থেকে তুলনামূলক কম ধ্বংসাত্মক। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত তাপমাত্রা পূর্ববর্তী মাসগুলির (শীতকালের মাসগুলি) তুলনায় দ্রুত বাড়তে থাকে। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে সারা দেশে বিশেষ করে দেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে দৈনিক তাপমাত্রা সর্বোচ্চ পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।

বায়ুমন্ডলের নিম্নস্তরে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ুর উপস্থিতি কালবৈশাখী সৃষ্টির অপরিহার্য পূর্বশর্ত। অস্থিতিশীল বায়ুমন্ডল আর দ্রুত পরিচলন ক্রিয়া কালবৈশাখীর উৎপত্তি ও বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।

কালবৈশাখী ঝড় সৃষ্টির কারণ :-

কালবৈশাখী সৃষ্টির প্রধান কারণ দেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে আসা উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু যা ঊর্ধ্বে ২ কিলোমিটার পর্যন্ত আরোহন করে থাকে এবং এ উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু উত্তর-পশ্চিম এবং পশ্চিম দিক থেকে আসা অপেক্ষাকৃত শীতল ও শুদ্ধ বায়ুর সঙ্গে মিলিত বা মুখোমুখি হয়।

উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু ছোটনাগপুর মালভূমিতে সৃষ্টির পর পূর্বদিকে ধাবিত হয়ে উপস্থিত হয়। বিপরীতধর্মী ও অসম এ দু বায়ুপ্রবাহের মুখোমুখি হওয়ার ফলে প্রাক-কালবৈশাখীর সৃষ্টি হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ