রপ্তানি কাকে বলে বা কি?

পৃথিবীর সবগুলো দেশ প্রাকৃতিক দিক থেকে এক রকম নয়। জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে একেক দেশে একেক প্রকারের হতে পারে। যার ফলে সব দেশে সব রকমের পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। কিন্তু মানুষের প্রয়োজন তো আর সেজন্য থেমে থাকে না, বাঁধভাঙা স্রোতের মতো প্রয়োজনের গতি - থাকে সদা চঞ্চল।

তাই প্রয়োজন মেটানোর তাগিদে প্রত্যেক দেশ তার নিজস্ব সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী বিশেষ বিশেষ পণ্য উৎপাদনে বিশেষায়িত হওয়ার চেষ্টা করে। যে পণ্য যে দেশ উৎপন্ন করতে সামর্থ্য সেটা সে অন্য দেশ থেকে সংগ্রহ করে।

পণ্য উৎপাদনে এরূপ বিশেষায়নের ফলে পৃথিবীর প্রত্যেক দেশ একে অপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এ ধরনের পারস্পরিক নির্ভরতা থেকে উৎপত্তি হয় বৈদেশিক বাণিজ্যের। এ বৈদেশিক বাণিজ্যের দুটি প্রধান অঙ্গ আমদানি ও রপ্তানি। এই পোস্টে আমরা রপ্তানি কাকে বলে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।

রপ্তানি কাকে বলে বা কি :-

কোনো দেশ অন্য কোনো দেশে পণ্যসামগ্রী বিক্রয় করলে বিক্রয় কার্যকে রপ্তানি বলা হয়। অর্থাৎ যখন একটি দেশ অন্য একটি দেশে পণ্য বা সেবাসামগ্রয়ী বিক্রয় করে তখন এরূপ বিক্রয়কার্য রপ্তানি হিসেবে পরিচিত।

দুটি দেশের মধ্যে সংঘটিত এ লেনদেনে উদ্বৃত্ত অঞ্চল হতে ঘাটতি অঞ্চলে পণ্যদ্রব্যাদি প্রেরণ করা হয়। কোনো দেশই নিজেদের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ও সেবাকর্ম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।

আরও পড়ুন:- পণ্যের জীবনচক্র কাকে বলে?  

এ কারণে দুটি দেশের মধ্যে পণ্যদ্রব্যের আদানপ্রদান কার্য সম্পাদিত হয়। যখন কোনো দেশ তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বা উদ্বৃত্ত পণ্যদ্রব্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে অন্য দেশে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে তখন তাকে রপ্তানি বলে।

যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ রপ্তানিকার্যে জড়িত থাকে তাকে রপ্তানিকারক বলা হয়। নিয়ে রপ্তানির কয়েকটি সংজ্ঞা উদ্ধৃত করা হলো।
রপ্তানি কাকে বলে

রপ্তানির সংজ্ঞা :-

ডেভিড জে. র‍্যাকম্যান (David J. Rackman) ও তাঁর সহযোগীদের মতানুযায়ী, "রপ্তানি হলো অন্য কোনো দেশে পন্যদ্রব্য বা সেবা বিক্রয় ও জাহাজিকরণ"

রপ্তানি কাকে বলে? এ সম্পর্কে স্কিনার ও ইভানসেভিচ (Skinner and Ivancevich)-এর মতে, “রপ্তানি হলো দেশে তৈরি পণ্য অন্য কোনো দেশে বিক্রয় করা।"

পি. এইচ. কলিন (P.H. Collin) রপ্তানি কাকে বলে? এ সম্পর্কে বলেন, “বিক্রয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে বিদেশে পণ্য প্রেরণই হলো রপ্তানি।"

সুতরাং, প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন সাপেক্ষে যখন এক দেশের উদ্বৃত্ত পণ্য ও সেব্যসামগ্রী অন্য কোনো দেশে বিক্রয় করা হয় তখন তাকে রপ্তানি বলে।

রপ্তানির মাধ্যমে এক দেশ যেমন প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিদেশ থেকে সংগ্রহ করে দেশীয় চাহিদা পূরণ করতে পারে, তেমনি অন্য দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দ্রুত সমৃদ্ধি আনয়ন করতে সক্ষম হয়।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ