বৃষ্টিপাত কাকে বলে? বৃষ্টিপাত কত প্রকার?

বৃষ্টিপাত কাকে বলে :-

আমরা জানি, কোনো অঞ্চলের প্রাত্যহিক বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বারিপাত, বায়ুপ্রবাহের গড় অবস্থাকে বলা হয় আবহাওয়া।

বৃষ্টিপাত হলো কোনো অঞ্চলের আবহাওয়ার একটি অবস্থা যা নানা ধরনের আবহাওয়ার উপাদানসমূহের উপর নির্ভরশীল। জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু ঊর্ধ্ব আকাশে ঠাণ্ডা ও ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয়। এই সকল মেঘের মধ্যে থাকে অসংখ্য পানিকণা ও বরফকণা। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি ও বরফকণা পরস্পরের সাথে মিলে বড় পানির কণায় পরিণত হয়।

স্বাভাবিকভাবে মেঘ যখন আকাশে ভাসতে থাকে তখন তা ঘনীভূত হয়ে ফোঁটা ফোঁটা আকারে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে বলা হয় বৃষ্টিপাত ( Rainfall)।

আরও পড়ুন :- বায়ু প্রবাহ কাকে বলে?

সূর্যের তাপে যে জলীয়বাষ্প তৈরি হয়। তা উপরের শীতল বায়ুর সংস্পর্শে আসলে তা সহজেই পরিপৃক্ত হয়। ঐ পরিপৃক্ত বায়ুই পরে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র জলকণাতে পরিণত হয় এবং বায়ুমন্ডলের ধূলিকণার সংস্পর্শে এসে জমাট বেঁধে মেঘের আকার ধারণ করে। এই মেঘ বাতাসে ভাসতে থাকে। বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা যদি হ্রাস পায় তবে ঐ ঘনীভূত মেঘ পানির কণা বা বরফকুচিরূপে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীতে পতিত হয়। এই পদ্ধতিতেই বৃষ্টিপাত হয়।
বৃষ্টিপাত কাকে বলে

বৃষ্টিপাতের কয় প্রকার ও কি কি:-

মোট ৪টি উপায়ে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু ঊর্ধ্বাকাশে উত্থিত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় বলে বৃষ্টিপাত প্রধানত ৪টি ভাগে বিভক্ত। এই ৪টি প্রকারভেদ হলো

১. পরিচলন বৃষ্টিপাত
২. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত
৩. ঘূর্ণিবাত বৃষ্টিপাত এবং
৪. সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত।

এই চার প্রকার বৃষ্টিপাত সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হলো -

আরও পড়ুন :- জলচক্র কি?

১. পরিচলন বৃষ্টিপাত কাকে বলে:

ভূ-পৃষ্ঠের বায়ু উষ্ণ হলে প্রচুর জলীয়বাষ্প সম্পন্ন হালকা বায়ু উপরে উঠে যায়। এ সময়ে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে ঐ জলীয়বাষ্প প্রথমে মেঘ ও পরে বৃষ্টিতে পরিণত হয়ে সোজা নিচে নেমে আসে। এই বৃষ্টিপাতকে বলা হয় পরিচলন বৃষ্টি।

২. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কাকে বলে:

জলীয়বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু ভূ-পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সময় পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হলে তা পর্বতের ঢাল বেয়ে উপরের দিকে উঠে যায়। এই বায়ু শীতল হয়ে পর্বতের প্রতিবাত ঢালে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়। তাকে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি বলে।

৩. ঘূর্ণিবাত বৃষ্টিপাত কাকে বলে:

ঘূর্ণিবাত কেন্দ্রের বায়ু যখন উপরে উঠে যায় তখন তাপমাত্রা হ্রাস পায় ও শীতল হয়। এ সময় বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্প অতিরিক্ত ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিবাত বৃষ্টপাত ঘটায়।

৪. সংঘর্ষ বৃষ্টিপাত কাকে বলে:

শীতল ও উষ্ণ বায়ুপুঞ্জ যখন মুখোমুখি হয় তখন শীতল বায়ুর সংস্পর্শে উষ্ণ বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস পায় এবং শিশিরাকে পৌঁছায়। আরও ঘনীভূত হয়ে বায়ুপুঞ্জের সংযোগস্থলে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এই প্রকার বৃষ্টি নাতিশীতোষ্ণ বৃষ্টিপাত নামে পরিচিত। এই ধরনের বৃষ্টি নীতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে দেখা যায়।


বৃষ্টিপাতের কারণ :-


বৃষ্টি পৃথিবীতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। বৃষ্টিপাতের কারণ অনেকগুলো কারণের সমন্বয়ে প্রদত্ত হয়ে থাকে। বর্তমানে পৃথিবীর জলমাসুর সাথে বিভিন্ন পার্থিব ও বায়ুমসৃষ্টির সাম্যের ফলে বৃষ্টিপাত ঘটে।

প্রথমেই, বৃষ্টিপাতের প্রধান কারণ হলো পৃথিবীর উপর তাপমাত্রা ও ভাষার পরিবর্তন। পৃথিবী একটি গোলাকার বস্তু, যেটি অবশ্যই সমতল নয়। তাই বিভিন্ন স্থানে উষ্ণ হওয়ার সময় আরেক স্থানে ঠাণ্ডা হতে পারে। এই পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার শক্তি প্রকাশ হয় এবং বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।

দ্বিতীয়ত, সমুদ্রের তাপমাত্রা ও প্রবাহের পরিবর্তন বৃষ্টিপাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। উষ্ণ সমুদ্রীয় প্রান্তে উপনদী ও নদীর জল ভাসায় হয়ে থাকে এবং এই উষ্ণ ভাপ পৃথিবীর উপর উঠে এবং ঠাণ্ডা সংখ্যার বায়ুর সাথে মিলে যায়। এই সংখ্যার বায়ু তাপমাত্রা কমিয়ে যায় এবং বৃষ্টিপাত উদ্ভব হয়ে থাকে।

তৃতীয়ত, প্রাকৃতিক পরিবেশের অবনতি বৃষ্টিপাতের কারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাবলিমিশ্র অংশ। উদাহরণস্বরূপ, গাছের কাটা ও জমির দমকল বৃষ্টিতে প্রকাশিত জৈব গ্যাসের প্রভাবে সাবলিমিশ্র পরিবেশের অবনতি হয়ে থাকে। এই পরিবেশের অবনতি পৃথিবীর তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনের উপর প্রভাব ফেলে এবং বৃষ্টিপাত উদ্ভব করে।

বৃষ্টিপাতের কারণ সম্পর্কে অধিক জানতে গবেষণা এবং প্রশাসনিক সরঞ্জাম গড়ে তোলা উচিত। বৃষ্টিপাত একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, এবং এটির সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনীতিক এবং পরিবেশগত প্রভাব থাকতে পারে। এই প্রক্রিয়াকে বিশেষভাবে ধৃতি দিয়ে গ্রহণ করে এবং প্রশাসনিক নীতি তৈরি করা উচিত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ