বদ্ধ প্রশ্ন কাকে বলে? বদ্ধ প্রশ্ন কত প্রকার ও কি কি? বদ্ধ প্রশ্নের বৈশিষ্ট্য?

বদ্ধ প্রশ্ন কাকে বলে :-

যে প্রশ্নের একটি মাত্র সঠিক উত্তর থাকে তাকে বদ্ধ প্রকৃতির প্রশ্ন বলা হয়।

এই সকল প্রশ্নের উত্তরে সাধারণত হ্যাঁ / না বললেই হয় অথবা সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে হয়। এগুলোকে ইংরেজিতে closed অথবা skinny প্রশ্ন বলা হয়।

বদ্ধ প্রকৃতির প্রশ্ন দ্বারা স্মৃতির পুনরুদ্রেকের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ ধরনের প্রশ্নের সাহায্যে শিক্ষার্থীর পূর্বজ্ঞান যাচাই করা যায় এবং শিখনের পর অর্জিত জ্ঞান যাচাই করা হয়।

আরও পড়ুন :- মাথা খাটানো পদ্ধতি কি?

কখনও কখনও বদ্ধ প্রকৃতির প্রশ্ন উন্মুক্ত প্রশ্নের রূপ লাভ করতে পারে। বদ্ধ প্রশ্নের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বদ্ধ প্রশ্নের উত্তরের একটি নির্দিষ্ট কাঠামো থাকে।

যে বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে বদ্ধ প্রশ্ন করা হয়, তার একটি নির্দিষ্ট পরিসীমা থাকে। প্রশ্ন বিষয়বস্তুর যেখান থেকে ইচ্ছা করা যাবে না। উত্তরও দিতে হবে এক বা একাধিক নির্দিষ্ট ধারণা থেকে।

অর্থাৎ এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর প্রদানে শিক্ষার্থীর স্বাধীনতা থাকে না। যদি প্রশ্ন বা উত্তর কোনটারই নির্দিষ্ট কোন সীমা না থাকে তবে তা উন্মুক্ত প্রশ্নের গুণাবলি অর্জন করতে পারে।
বদ্ধ প্রশ্ন কাকে বলে

বদ্ধ প্রশ্নের বৈশিষ্ট্য :- 

  • উত্তরদাতা সহজে ও দ্রুত উত্তর দিতে পারে।
  • বিকল্প উত্তরের সাথে কাঠামোগত আইটেম থাকে।
  • উত্তর খুব সহজেই তুলনা করা যায়।
  • সকল উত্তরদাতার উত্তরের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের উৎস এক।
  • উত্তরদাতা স্মৃতি থেকে তথ্য পুনরুদ্ধারের সুযোগ পায়।
  • উত্তরের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের যথার্থতা নিশ্চিত করে।
  • সকল ধরনের মেধার (উচ্চ মধ্যম ও নিম্ন) শিক্ষার্থীই উত্তর দিতে সক্ষম।
  • ভুল উত্তরের সম্ভাবনা থাকে।
  • উত্তরের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য করা সম্ভব হয় না।
  • পাঠের সকল দিক বিবেচনায় নাও আসতে পারে।

বদ্ধ প্রকৃতির প্রশ্নে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও শিক্ষার্থীর জ্ঞান অর্জনে এ প্রশ্ন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।


বদ্ধ প্রশ্নের শ্রেনীবিভাগ :-

বদ্ধ প্রশ্নকে দুভাবে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

ক. জ্ঞানমূলক প্রশ্ন (Cognitive memory Question )

খ. সমকেন্দ্রিক প্রশ্ন (Convergent Question)

এই দুই প্রকার বদ্ধ প্রশ্ন নিয়ে নিন্মে আলোচনা করা হলো-

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন কাকে বলে :-

এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর স্মৃতি নির্ভর। এ ধরনের প্রশ্নে শিক্ষার্থী জানা কোন তথ্য স্মরণ করে উত্তর দেয়। সম্পূর্ণভাবে জানা তথ্যের জগত থেকে মনে করে শিক্ষার্থীরা উত্তর দিতে পারে সে ধরনের প্রশ্ন এখানে করা হয়।

এধরনের প্রশ্নের উত্তরের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় বই, ওয়েবসাইট ও অন্যান্য রেফারেন্স। মূলত এ প্রশ্নের উত্তর হয় সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত।

যেমন - মহাদেশ কয়টি ? এধরনের প্রশ্ন সাধারণত কে, কী, কোথায়, কেন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

যেমন- শ্বসন কী? উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান কয়টি? সুন্দরবন কোন কোন জেলায় অবস্থিত ?

সমকেন্দ্রিক প্রশ্ন কাকে বলে :-

এধরনের প্রশ্ন বদ্ধ প্রশ্নের অন্তর্ভুক্ত এবং চিন্তামূলক। এ প্রশ্নের একটিই শুদ্ধ উত্তর থাকে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে চিন্তা করে উত্তর দিতে হয় এবং একটিই সঠিক উত্তর থাকে।

প্রদত্ত তথ্যের মনে করা তথ্যের বিশ্লেষণ একত্রিকরণকে প্রতিনিধিত্বকারী প্রশ্নই হচ্ছে সমকেন্দ্রিক প্রশ্ন। সমকেন্দ্রিক প্রশ্নের পরিসর জ্ঞানমূলক প্রশ্নের চেয়ে একটু বেশি।

ব্যাখ্যা করা, সম্পর্কের বিবরণ দেওয়া, পার্থক্য করা ও তুলনা করার জন্য সমকেন্দ্রিক প্রশ্ন করা হয়। এ ধরনের প্রশ্নে সাধারণত কেন, কীভাবে, কী প্রক্রিয়ায় ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

যেমন: আবহাওয়া ও জলবায়ুর দু'টি পার্থক্য বল?


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ