প্রসার বা মার্কেটিং কাকে বলে? মার্কেটিং এর উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব?

বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয় হচ্ছে প্রসার বা মার্কেটিং। পণ্য উৎপাদন পরিকল্পনা, এই পণ্যের মূল্য নির্ধারণ এবং বণ্টন এ সব বাজারজাতকরণ। কার্যাবলী প্রধান কোম্পানীর অভ্যন্তরীণ কার্যাবলীর অন্তর্ভূক্ত কিন্তু একটি কোম্পানী তার এ সকল কার্যাবলীর মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারে না যে তার উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বাজারে গৃহীত হবে এবং তার বাজারজাতকরণ উদ্দেশ্য সফল হবে। এক্ষেত্রে তাই কোম্পানীকে বিক্রয় প্রসার বা মার্কেটিং নীতি অনুসরণ করতে হয় যার মাধ্যমে সে পণ্যসামগ্রী সম্পর্কে ক্রেতাদেরকে পরিচিত করাতে পারে এবং ক্রেতাদের সাথে একটি কার্যকরী যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।

প্রসার বা মার্কেটিং কাকে বলে? মার্কেটিং :-

সহজভাবে বাজারজাতকরণ প্রসার বা মার্কেটিং বলতে যা বুঝায় তা হলো- পণ্যের বাজার সৃষ্টির জন্য প্রকৃত ভোক্তা ও বিক্রয়তাদের অবহিত করে পণ্যটি ক্রয়ে ক্রেতাদের আগ্রহী করে তুলবার জন্য যে উপায় বা কৌশল ব্যবহার করা হয় তাকে এক কথায় প্রসার বা মার্কেটিং বলা হয়।
মার্কেটিং কাকে বলে

প্রসার বা মার্কেটিং এর উদ্দেশ্য বা গুরুত্ব :-

একটি প্রতিষ্ঠান যে লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নিয়ে তার বাজারজাতকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রসারের গুরুত্ব বা ভূমিকা অপরিসীম। প্রধানত যে সব লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রসারকার্যক্রম গ্রহণ করা হয় সেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো

১. অবহিতকরণ (To inform) :-

ক্রেতাদের কাছে পণ্যকে পরিচিত করা বা তাদেরকে নতুন পণ্য সম্পর্কে জানানো প্রসারের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য। একটি নতুন পণ্য যখন বাজারে আসে তখন ক্রেতারা ঐ পণ্য সম্পর্কে কিছুই জানে না যতক্ষণ না বিভিন্ন মাধ্যমে (যেমন- খবরের কাগজ, টেলিভিশন, ম্যাগজিন ইত্যাদি) ক্রেতাদেরকে না জানানো হয়। সে কারণে পণ্য সম্পর্কে তথ্য অবহিতকরণ প্রসারের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

২. প্রভাবিত করুণ (To influence) :-

মার্কেটিং কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্রেতাকে সুষ্ঠু অবহিতই করা হয় না বরং পণ্য ও সেবার গুনাগুণ, দাম, বৈশিষ্ট্য ও প্রাপ্তি স্থান সম্পর্কে জানানো হয় এবং এই যোগাযোগের মাধ্যমে সম্ভাব্য ক্রেতারা যাতে প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও সেবা ক্রয় করে তার জন্য তাদের মনোভাব পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়।

আরও পড়ুন:- অর্থসংস্থান কাকে বলে?

৩. চাহিদা সৃষ্টি (To Create Demand) :-

অধিকাংশ প্রসার কার্যের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে চাহিদা সৃষ্টি করা। অধিক সংখ্যক ক্রেতাকে অবহিত করে দ্রব্য বা সেবা ক্রয়ে প্রলুব্ধ করা। মুল্যের পরিবর্তন ও প্রসার কার্যক্রম বৃদ্ধি করে অনেক প্রতিষ্ঠানেই পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি করে থাকে।

৪. পণ্য পৃথকীকরণ (To Differentiate the product) :-

প্রসার কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি কোম্পানী তার উৎপাদিত পণ্যকে প্রতিযোগিদের পণ্য থেকে আলাদা করে ক্রেতার কাছে উপস্থাপন করতে পারে।

৫. স্মরণ [To remind) :-

আমরা জানি যে, প্রতিযোগীতা মূলক বাজার একই পণ্যে বা সেবার সমজাতীয় ও অনেক পণ্য থাকে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এর ফলে ক্রেতারা অনেক সময় এত পণ্যের ভিড়ে একটি নির্দিষ্ট পণ্যকে ভুলে যেতে পারে। তাই প্রত্যেক কোম্পানী কারবার মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করে ক্রেতাদেরকে তাঁর পণ্য ও সেবা সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে থাকে।

৬. ভাবমূর্তি গঠন (To Create Image) :-

প্রসারের আর একটা উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের ভালো ইমেজ ক্রেতাদের মনের মধ্যে গড়ে তোলা। করণ ভালো ইমেজ বা ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে পারলে ভবিষ্যৎ বাজার সৃষ্টি হয় ও বর্তমান বাজার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। এ ছাড়াও ভালো ইমেজ ক্রেতাদের সহজে ঐ পণ্যের প্রতি আস্থাও বৃদ্ধি পায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ