মূত্র কাকে বলে? মূত্রের বৈশিষ্ট্য? মূত্রনালির রোগ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার?

মূত্র কাকে বলে :-

মেরুদণ্ডী প্রাণীদের নাইট্রোজেনঘটিত তরল রেচন পদার্থকে মূত্র ( urine) বলে।

অপরদিকে নেফ্রনের রেনাল টিউবিউলসে গ্লোমেরুলার ফিলট্রেট-এর নির্বাচিত পুনঃশোষণের পর যে হালকা হলুদ বর্ণের, তীব্র ঝাঝালো গন্ধযুক্ত ও অম্লধর্মী তরল রেচন বর্জ্য মূত্রাশয়ে জমা হয় তাকে মূত্র বলে।

একজন পূর্ণবয়স্ক স্বাভাবিক মানুষ দৈনিক প্রায় ১৫০০ মি. লি. মূত্র ত্যাগ করে।


মূত্রের উপাদান :-

মূত্র ৯৫-৯৭% পানি ও ৩-৫% কঠিন পদার্থ নিয়ে গঠিত। কঠিন পদার্থের মধ্যে ৪০% অজৈব পদার্থ এবং ৬০% জৈব পদার্থ । এছাড়াও অতি অল্প পরিমাণে আয়োডিন, সাইট্রেট, ল্যাকটেট, স্টেরয়েড ও এনজাইম মূত্রে পাওয়া যায়।
মূত্রের উপাদান

মূত্রের বৈশিষ্ট্য :-

১. স্বাভাবিক মূত্রে ইউরোক্রোম ও ইউরোবিলিন নামক রঞ্জক পদার্থের উপস্থিতির কারণে বর্ণ হালকা হলুদ হয়।

২. পূর্নবয়স্ক মানুষের গড়ে প্রতিদিন ১.৫ লিটার মূত্র উৎপন্ন হয়। মূত্রের পরিমাণ পানি পানের মাত্রা, খাদ্যের ধরন, পরিবেশ, মানসিক অবস্থা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে।

৩. মূত্রের স্বাভাবিক আপেক্ষিক গুরুত্ব ১.০১-১.০৫।

৪. স্বাভাবিক মূত্র অ্যামোনিয়া গন্ধযুক্ত হয়। তাজামূত্র স্বচ্ছ ও অম্লধর্মী। এর pH সকল বেলা ৬.৫-৭.০ এবং বিকাল বেলা ৭.৫-৮.0 ।

আরও পড়ুন :- বৃক্ক বিকল কাকে বলে?

মূত্রনালির রোগ হওয়ার কারণ :-

অপরিস্কার ও অস্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনে, দৈনিক প্রায় ৮ গ্লাসের (২ লিটার) কম পানি পান করলে, নির্দিষ্ট সময়ে মূত্রত্যাগ না করলে এবং নানা কারণে মূত্রনালির রোগ দেখা দেয়। মূত্রনালির সংক্রমণ হলে মূত্রনালি জ্বালা পোড়াসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। যতদ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ ও চিকিৎসা গ্রহণে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করা যায়।

মূত্রনালি সুস্থ রাখার উপায় :-

১. শিশুদের টনসিল ও খোস পাঁচড়া থেকে সাবধান হওয়া,

২. ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা,

৩. ডায়রিয়া ও রক্তক্ষরণ ইত্যাদির দ্রুত চিকিৎসা করা,

৪. ধূমপান ও ব্যথা নাশক ঔষধ পরিহার করা,

৫. পরিমাণ মতো পানি পান করা,

৬. সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করা,

৭. সুষম ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ করা এবং

৮. নির্দিষ্ট সময়ে মূত্রত্যাগ করা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ